ভোটের দিন করণীয় ও বর্জনীয় - শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠ নির্বাচনের জন্য আপনার দায়িত্ব।


ভোট একটি নাগরিক অধিকার। সঠিকভাবে ভোটদানে গণতন্ত্র মজবুত হয় এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ প্রসারিত হয়। তবে অনেকের কাছে পরিষ্কার নয়, নির্বাচনের দিন বা ভোটের দিনে কী করা যায় এবং কী আইনত নিষিদ্ধ। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব ভোটের দিনে করণীয় এবং বর্জনীয় বিষয়গুলো। চলুন এক নজরে জেনে নিই।

ভোটের দিন করণীয় ও বর্জনীয়

◉ ভোটের দিন করণীয় (যা করা উচিত) : 

১. ভোট দেওয়ার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) বা ভোটার স্লিপ সঙ্গে রাখা এটি বাধ্যতামূলক। পরিচয়পত্র ছাড়া ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে সমস্যা হতে পারে।

২. নির্ধারিত সময় সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। তাই প্রত্যেক নাগরিকে উচিত সময়মতো ভোটকেন্দ্রে যাওয়া।

৩. ভোটারদের ভিড় সামলাতে শৃঙ্খলা জরুরি, তাই ধৈর্য ধরে নিজের পালা পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত। 

৪. ভোট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা মেনে চলা - প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্দেশ নির্বাচন শৃঙ্খলার জন্য মানা জরুরি।

৫. ভোট একটি ব্যক্তিগত অধিকার। কাকে ভোট দিলেন, সেটি অন্যকে জানানো বা দেখানো আইনতও সঠিক নয়।

৬. যদি কোনো ধরনের অনিয়ম বা জালিয়াতি চোখে পড়ে, তবে দায়িত্বশীলভাবে নির্বাচন কমিশন বা কর্মকর্তাদের জানাতে হবে।

 ভোটের দিন বর্জনীয় (যা করা যাবে না) :

১. ভোটকেন্দ্রে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ব্যালটের ছবি তোলা, ভিডিও করা বা কল করা যাবে না। এটি ভোটের গোপনীয়তা নষ্ট করে।

২. একাধিকবার ভোট দেওয়ার চেষ্টা করা - এটি জাল ভোট হিসেবে গণ্য হবে এবং আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

৩. অন্যের হয়ে ভোট দেওয়া - কারো পরিচয়পত্র নিয়ে ভোট দেওয়া যাবে না, এটি ফৌজদারি অপরাধ।

৪. ভোটের দিনে প্রার্থীর পক্ষে স্লোগান, পোস্টার বা ব্যানার ব্যবহার কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।

৫. মারামারি, হুমকি, কেন্দ্র দখল করার চেষ্টা - এগুলো নির্বাচন ব্যাহত করে এবং আইনের আওতায় শাস্তিযোগ্য।

৬. নির্বাচনের দিন অস্ত্র রাখা বা মাদকাসক্ত অবস্থায় কেন্দ্রে প্রবেশ আইনত দণ্ডনীয়।

৭. আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং জরিমানার পাশাপাশি কারাদণ্ডও হতে পারে।

◉ আইন অনুযায়ী শাস্তির বিধান :

  • একাধিকবার ভোট দেওয়া বা ভুয়া ভোট দিলে ফৌজদারি মামলা হতে পারে।
  • কেন্দ্র দখল, হাঙ্গামা বা সহিংসতায় জড়িত হলে দীর্ঘ মেয়াদি কারাদণ্ড ও জরিমানা হতে পারে।
  • নির্বাচন আইন ভঙ্গকারী যেকোনো কর্মকাণ্ড গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়।

ভোটের দিন শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং সঠিকভাবে ভোট প্রদান করা আমাদের নাগরিক দায়িত্ব। নির্বাচনের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে করণীয়গুলো মেনে চলা এবং বর্জনীয় কাজগুলো এড়িয়ে চলা অপরিহার্য। আপনার সচেতন অংশগ্রহণই গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে। তাই মনে রাখুন, ভোট শুধুমাত্র আপনার অধিকারই নয়, এটি আপনার দায়িত্বও। দায়িত্বশীল ও সতর্কভাবে ভোটদান করুন, যাতে নির্বাচন হয় সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ।


Post a Comment

0 Comments